Oplus_0

এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ঢাকায় ফেরৎ আনতে চেয়েছিলেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চক্রান্তে এবার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। তাই সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গেই ফিরতে হচ্ছে খালেদাকে।

 

বছরের শুরুতেই কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে রাজকীয় বহরের একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স তাকে ঢাকা থেকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। তাতে চেপেই ৮ জানুয়ারি লন্ডন যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। লন্ডন থেকে দেশে ফেরার সময়ও একই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনুসের কুটচালে সেটি ভেস্তে যায়, বলে জানা গিয়েছে। জল্পনা চলছে, ড. ইউনূস চাননি খালেদা জিয়া আন্তর্জাতিক কোনও সম্মান বা কোনও সুবিধা পান। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তায় ক্ষুব্ধ প্রধান উপদেষ্টা তাই ভেস্তে দিয়েছেন এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে খালেদা জিয়ার দেশের ফেরার পরিকল্পনা।

 

ড. ইউনূসের নীচ মানসিকতা ও ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষুদ্র রাজনীতির কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু অসুস্থ ৭৮ বছরের বৃদ্ধা, দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি যেটা করলেন সেটা অতীতের সমস্ত অপকর্মকে ছাপিয়ে গিয়েছে। চলতি বছর ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা তিনি সহ্য করতে পারেননি। তাই বেগম জিয়ার প্রত্যাবর্তনের জন্য রয়েল কাতার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার প্রস্তাবটি তিনি নিজেই ব্যর্থ করে দেন। ড. ইউনুস জিয়া পরিবারের আন্তর্জাতিক মর্যাদাকে সহ্য করতে পারেননি। তার ধারণা বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র আন্তর্জাতিক মর্যাদা এবং সম্মানের অধিকারী। অন্য কেউ আন্তর্জাতিক সম্মান পাক সেটা তিনি সহ্য করতে পারেন না।

 

বেগম খালেদা জিয়া জনপ্রিয়তায় বাংলাদেশে তার থেকে অনেক এগিয়ে, এটা ভালোই বোঝেন তিনি। তাই নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স নিয়েও ড. ইউনূস নোংরা রাজনীতি করলেন। তার এই ধরনের চক্রান্তের বিষয়ে বিএনপি নেতারা এখনও মুখ না খুললেও তারা সবই বুঝতে পারছেন।

সোমবার খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাধারণ বিমানে। বিমানটি রবিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে সিলেট হয়ে ঢাকা পৌঁছাবে সকাল ১১টা নাগাদ। তার সঙ্গে সেই বিমানেই দেশে ফিরছেন, তারই দুই পুত্রবধূ তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. আমিনুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম এবং রূপা হক। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।

 

চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় কাতারের আমির সৌজন্যতা দেখিয়ে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়েছিলেন। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি বর্তমানে রয়েছেন। এখন কিছুটা সুস্থ বোধ করায় তিনি দেশে ফিরতে চান। তবে চিকিৎসকরা তাকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সেই ঢাকায় ফেরার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেইমতো দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। বরং কাতারের আমির যাতে খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স না পাঠান তারজন্যও তদ্বির করেন ড. ইউনূস, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। ড. ইউনূসের এই ব্যবহারে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here