চা বাগান দেখতে এখন আর পাহাড়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই । হাওড়া শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে গেলেই দেখতে পাবেন চা বাগান। বোটানিক্যাল গার্ডেনের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষামূলকভাবে সমতলে চা বাগান তৈরি করতে সফল হয়েছেন। শুক্রবার থেকে তা দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

 

বোটানিক্যাল গার্ডেনের যুগ্ম অধিকর্তা দেবেন্দ্র সিং জানান, ‘আমরা যতগুলো চা গাছ বসিয়ে ছিলাম, তার ৮০ শতাংশ সমতলের জল হওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। গাছগুলোর বৃদ্ধির হার যথেষ্ট ভালো।’

হাওড়া শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন

বোটানিক্যাল গার্ডেনের চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণবঙ্গের প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে কোন প্রজাতির চা গাছ টিকে থাকতে পারবে, সেজন্য আমরা গার্ডেনের মাটি পরীক্ষা করে অসম, দার্জিলিং, ডুয়ার্স থেকে পাঁচ রকম প্রজাতির চারা গাছ এনে, তিন ফুট গর্ত করে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বসিয়ে ছিলাম । চা গাছের চারা বেঁচে থাকার জন্য যে ঠান্ডা পরিবেশ লাগে তা তৈরি করার জন্য অটোস্প্রিংকলার মেশিন থেকে ১০ মিনিট অন্তর গাছে জল দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

বি গার্ডেনের গ্রেট বেনিয়ান ট্রি

গাছের গোড়ায় যাতে জল না জমে, তার জন্য গ্রেট বেনিয়ান ট্রির ঝিলের পাশে এক বিঘা জমিতে উঁচু ঢিপি বানানো হয়। চারিদিকে বড় বড় গাছ থাকায় সরাসরি চা গাছে রোদ পড়ছে না । আলোছায়া ঘেরা পরিবেশ, যা চা গাছের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

 

‘ডুয়ার্সের সঙ্গে এখানকার তাপমাত্রা খুব একটা পার্থক্য নেই। ঢালু জমি তৈরি করে, জলের যোগান দেওয়ার কাজও খুব কঠিন নয়। চা গাছের জন্য আলোছায়া পরিবেশ দরকার। যেটা বি গার্ডেনে রয়েছে। কৃত্রিম উপায়ে চা গাছ তৈরি করা যেতেই পারে। তবে, পাহাড়ি চায়ের মতো ফ্লেভার পাওয়া যাবে না।’ বলছেন, বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গবেষক আক্রামূল হক।

ডুয়ার্সের চা বাগান

কয়েক বছর আগে কলকাতার ইকোপার্কে এই ধরনের চা বাগান তৈরির একটা চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, তা সফল হয়নি । বি গার্ডেনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ১৭৮০ সালে হাওড়া শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চা গাছ লাগিয়েছিলেন, ব্রিটিশ কর্নেল রবার্ট কিড।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here